নিউজ ১৭ বিডি ডেস্ক ঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক বিল্ডিং থেকে স্বামী-অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও তাদের দুই সন্তানসহ চারজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ( ২৫ নভেম্বর ) সন্ধ্যায় ভৈরব রানীর বাজার এলাকার শাহজাহান মিয়া নামের এক ব্যক্তির ছয় তলা বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাট থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে স্বামীকে ঝুলন্ত অবস্থায়, স্ত্রীর গলাকাটা ও তাদের দুই শিশু সন্তানের লাশ বিছানায় পাওয়া যায়।
নিহতরা হলেন—নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আনোয়ারাবাদ এলাকার মৃত গৌরাঙ্গ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে জনি চন্দ্র বিশ্বাস (৩০), স্ত্রী নিপা রানী বিশ্বাস (২৬) সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন, তাদের দুই সন্তান কথা বিশ্বাস (৪) ও দ্রুব বিশ্বাস (৮)।
মৃত জনির বড় ভাই সমীর চন্দ্র বিশ্বাস জানান, জনি বিশ্বাস ১০–১২ বছর যাবৎ ভৈরবে বাস করেন। তিনি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে। সেখান থেকে ফেরেন সন্ধ্যা নাগাদ। এরপর ভাইয়ের সঙ্গে আর কথা হয়নি।
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে এই ফ্ল্যাটের এক বাসিন্দা ফোন করে তাঁকে জানান, সকাল থেকে ওই কক্ষের দরজা বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে তিনি এসে এই মর্মান্তিক ঘটনা জানেন। তিনি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।
নিহত জনি চন্দ্র বিশ্বাসের মা শিখা রানী বিশ্বাস বলেন, গত রবিবার আমাদের বাড়িতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখান থেকে হাসি খুশিভাবে ফিরে এসেছে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ফোনে খবর পেলাম, আমার ছেলে মারা গেছে। এখন এসে দেখি আমার ছেলেসহ পুরো পরিবারই শেষ হয়ে গেছে।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন মিয়া জানান,ঘটনার দিন বিকেলে স্থানীয়দের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে দরজা ভেঙে জনি বিশ্বাসের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিছানায় তাঁর স্ত্রীর গলাকাটা মরদেহ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয় স্ত্রীকে। এ ছাড়া বিছানায় শোয়া অবস্থায় পরে আছে দুই সন্তানের নিথর দেহ।
স্থানীয়দের ধারণা, স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যার পর দুই শিশু সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জনি বিশ্বাস। পরে তিনি ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। তবে ময়নাতদন্তের আগে এ চারজনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবেনা বলে জানিয়েছে পুলিশ।